শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৪

প্রতিদিন উপাসনা ২ বার নাকি ৩ বার করা উচিত?

 

ত্রিসন্ধ্যা নাকি দ্বিসন্ধ্যা পবিত্র বেদে কি উপদেশ আছে

আমরা প্রতিদিন ২ বার নাকি ৩ বার উপাসনা করবো?



বৈদিক উপাসনা




উত্তরঃ অবশ্যই দ্বিসন্ধ্যা করা উচিত, তিন কালে সন্ধি হয় না। আলোক এবং অন্ধকারের সন্ধি সায়ং ও প্রাতঃ এই দুই কালেই হইয়া থাকে। যিনি ইহা মানিয়া মধ্যাহ্নকালে তৃতীয় সন্ধ্যা মানেন, তিনি মধ্যরাত্রিতেও উপাসনা করেন না কেন? যদি মধ্য রাত্রিতে সন্ধ্যা করিতে ইচ্ছা করেন, তবে প্রতি প্রহরে, প্রতি ঘটিকায়, প্রতি পলে এবং প্রতিক্ষণেও সন্ধি হইয়া থাকে তখনও সন্ধ্যোপাসনা করিতে থাকুন। যদি এইরূপ করিতে ইচ্ছা করেন, তবে তাহা হইতেই পারে না। এ ব্যাপারে বেদের প্রমান দেখুন→


স ঘা নো দেবঃ সবিতা সাবিষদমৃতানি ভুরি।
উভে সুষ্টুতী সুগাতবে।।
(অথর্ববেদ ৬.১.৩)



পদার্থঃ (সঃ) তিনি (দেবঃ) প্রকাশময় (সবিতা) প্রেরক প্রভু (ঘ) নিশ্চয়ই (নঃ) আমাদের জন্য (ভুরি) শ্রেষ্ঠ (অমৃতানি সাবিষৎ) অমৃতত্ব প্রাপ্ত করান - আমাদের রোগমুক্ত করেন। (উভে) দ্বিসন্ধ্যা (সুষ্টুতী) উত্তম স্তুতির - প্রাতঃ ও সায়ংকালীন স্তুতির দ্বারা (সুগাতবে) উত্তমরুপে গান করার জন্য প্রভু আমাদের নিরোগ করেন।




মন ই আমাদের উপসনালয়।আর তাতে সৎচিন্তা,ঈশ্বরচিন্তা থাকা ই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থনা।আর দিনরাত কিছুক্ষণ পরপর লোক দেখানো প্রার্থনা করে দৈনন্দিন সকল কাজে বিঘ্ন করা সনাতনের কাজ নয়।এজন্যই সনাতন পূর্ণাঙ্গ ও প্রকৃষ্ট জীবনবিধি।

মানবজাতির সংবিধান পবিত্র বেদে ধ্যনে প্রাপ্ত ঐশ্বরিক জ্ঞান ঋষি উক্ত করছেন এভাবে-

উপত্বাগ্নে দিবে দিবে দোষাব স্তর্ধিয়া বয়ন্।
নমো ভরন্ত এমসি।।

ঋগ্বেদ ১/১/৭; সামবেদ- পূর্ব্বার্চিক ১/২/৪
পদার্থঃ — হে পরমাত্মা! আমরা প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় বুদ্ধি ও কর্ম্মদ্বারা ভক্তির প্রণতি নিয়ে তোমার নিকট আসি।



অর্থাৎ সনাতন ধর্মে প্রতিদিন দুবার করে সকালে ও সন্ধ্যায় প্রার্থনা করা নিয়ম।

শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০২৪

উপবাস /ব্রত সম্পর্কে পবিত্র বেদের বানী

পবিত্র বেদ তথা বৈদিক শাস্ত্র উপবাস সম্পর্কে কি বলে আসুন জেনে নেই-


 “বয়ং সোম ব্রতে মনস্তনূষু বিভ্রতঃ। প্রজাবন্তঃ সচেমহি।।”
(ঋগ্বেদ, ১০/৫৭/৬)

অনুবাদঃ- হে প্রেমময় পরমাত্মান্! শরীরে মানসিক শক্তিকে ধারণ করিয়া আমার সন্তাদের সহিত তোমার ব্রতে তোমাকেই সেবা করিতেছি।

 “ব্রতেন দীক্ষামাপ্নোতি দীক্ষামাপ্নোতি দক্ষিণাম ।  দক্ষিণা শ্রদ্ধামাপ্নোতি শ্রদ্ধয়া সত্যমাপাতে ।।”
     (যজুঃ ১৯/৩০)

“হে মনুষ্যগণ !  তোমরা মনুষ্য জন্মের উদ্দ্যেশ্য জানিয়া ব্রত ধারণ করিয়া সংসারে কর্ম্ম কর ; (মনুষ্য জীবনে পূর্ণ সফলতা ও শ্রেষ্ঠ উৎকর্ষ লাভের জন্য কর্ত্তব্য পালন করিবার সঙ্কল্পকে ব্রত কহে)।

ব্রত ধারণ করিয়া কর্ম্ম করিলে, পৃথিবীর ঐশ্বর্য্য দক্ষিণাস্বরূপ তোমাদের দান করিয়া রাখিয়াছি  গ্রহণকরতঃ তাহার। সদোপযোগ করিয়া সুখী হও। ঐশ্বর্য্যে মোহপ্রাপ্ত না হইলে আমার উপর শ্রদ্ধা বাড়িতে থাকিবে, আমার উপর শ্রদ্ধা বাড়িলে আমাকে সত্যস্বরূপ ও আনন্দস্বরূপ জানিয়া ও প্রাপ্ত হইয়া মুক্তির আনন্দ ভোগ করিতে পারিবে।

উপবাস /ব্রত
বৈদিক মিশন


    
মনুষ্য বলিতে গেলে জীব জগতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ জীব,  জ্ঞান গ্রহণের উপযোগী, কর্ম্ম করিতে স্বাধীন, চৈতন্য স্বরূপ জীবাত্মাকেই বুঝায়। জীবাত্মা, শরীর ইন্দ্রিয় এবং বুদ্ধি অহংকাররূপ করণ আদির সাহয্যে জ্ঞান, কর্ম্ম, উপাসনা রূপ সমস্ত প্রয়োজন সাধিত করিয়া থাকে, ইহারা মনুষ্যের ভৃত্য স্বরূপ। স্থূল শরীর, ইন্দ্রিয় করণ আদি সমস্তই জড় প্রকৃতি হইতে উৎপন্ন বলিয়া ইহাদের ভোগের কোন প্রয়োজন থাকিতে পারে না। মনুষ্যের ব্রত বলিতে গেলে, আত্মার শ্রেষ্ঠ উৎকর্ষের উপযোগী কর্ত্তব্য কর্ম্ম করিবার সঙ্কল্প বুঝায়। মনুষ্য মাত্রেই দুঃখের নিবৃত্তি চায় ; সুখের আকাঙ্ক্ষাযুক্ত মানুষের মধ্যে কোথা হইতে দুঃখ আসিল জানিতে না পারিলে তাহার নিবৃত্তির উপায় কি করিয়া স্থির হইতে পারে।

শ্রীমদ্ভগবদ গীতা (ধ্যানযোগ : ১৬-১৭)
অতিভোজী, নিতান্ত অনাহারী, অতি ঘুম বিলাসী, একেবারে কম ঘুমায় তারা কখনো ধ্যানে সফল হয় না। যিনি নিয়মানুযায়ী আহার করেন, কাজ করেন, বিশ্রাম নেন, যার নিদ্রা ও জাগরণ নিয়মের ছন্দে ছন্দায়িত তিনি ধ্যানে সফল হন।তার দুঃখের বিনাশ ঘটে। বিচরণ করেন আত্মার আনন্দলোকে।

শ্রীমদ্ভগবদ গীতায় (ধ্যানযোগ : ১৬-১৭) বলেছে কর্মের জন্য (ব্রত/উপবাস) করতে হয় কেন তা বিশ্লেষণ করে দিচ্ছি—
ভোগাসক্ত, আসুরী-সম্পদসম্পন্ন, সেইসব মানুষের মনোভাব কীরূপ, ভোগে আসক্ত এরা নিজেদের শ্রেষ্ঠ মনে করে, অহংকার এবং অর্থগর্বে গর্বিত হয়ে থাকে।
হ্যাঁ, এরা যজ্ঞাদি শুভকর্ম যা কিছু করে তা সবই দম্ভ ও লোকদেখানোর জন্য এবং অবিধিপূর্বক করে থাকে।

তারা কেন এমন করে?— (কেননা তারা অহংকার, দম্ভ, অভিমান, কাম ও ক্রোধের আশ্রয় নিয়ে থাকে)। ভগবান, তাদের আর কী ভাব হয়?— (এইসব ব্যক্তি তাদের ও অপরের দেহস্থিত অন্তর্যামীরূপ আমাকে দ্বেষ করে থাকে এবং আমার ও অপরের গুণাদিতে দোষদৃষ্টি রাখে)।।

উপবাস বলতে কী বোঝায় তা খুব সংক্ষেপে কিছু বলা যাক— (উপবাস মানে ঈশ্বরের নিকটে বাস)।

ব্রত (উপবাস) করবেন আপনি যজ্ঞ, তপস্যা ও দানেরও তিনপ্রকার পার্থক্যের কথা শুনতে নির্দেশ দিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ।


সোমবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৪

মহামৃত্যুঞ্জয়ী মন্ত্র পবিত্র বেদে বর্নিত

Maha Mrityunjay Mantra বাংলা


মহামৃত্যুঞ্জয়ী মন্ত্র

ॐ ত্রৈয়ম্বকম্ য়জামহে
 সূগন্ধিম্ পূষ্টিবর্ধনম্ 
উর্বারূকমিব বন্ধনাম্ 
মৃত্যুরমোক্ষিয় মামৃতাত 


 Sanskrit and English 

ॐ त्र्यम्बकं यजामहे 
सुगन्धिं पुष्टिवर्धनम् | 
उर्वारुकमिव 
बन्धनान्मृत्योर्मुक्षीय माऽमृतात् || 


Aum Tryambakam yajaamahe 
sugandhim pushtivardhanam | Urvaarukamiva bandhanaan-mrityormuksheeya maamritaat ||

ধর্ম কাকে বলে?ধর্মের লক্ষন কয়টি ও কি কি?

ধর্ম কাকে বলে

যাহার স্বরূপ ঈশ্বর আজ্ঞার যথাবৎ প্রতিপালন এবং পক্ষপাতরহিত হইয়া ন্যায় অনুসারে সকলের হিত সাধন করা, যাহা প্রত্যক্ষাদি প্রমাণ দ্বারা সুপরিক্ষিত এবং বেদোক্ত হওয়ায় সর্ব মানবের পক্ষে একমাত্র মান্য তাঁহাকে ধর্ম বলে ।


 পণ্ডিত ব্রহ্মদত্ত জী বলছেন - "ধারয়তি লোকম" যা লোককে ধারণ করে তাহাকে ধর্ম বলা হয় । যাহার দ্বারা গ্রাম, নগর, দেশ, রাষ্ট্রের কল্যাণ হয় কেবল ইহাই নয়, অপিতু সম্পূর্ণ বিশ্বের সকল প্রাণী বর্গের জন্য যাহা কল্যাণকারী, মঙ্গলকারী হইবে, যাহা সংরক্ষক, সংবর্দ্ধক হইবে তাহাকে ধর্ম বলে । 


 গীতার আলোকে ধর্ম হচ্ছে - সরলতা, দান, অহিংসা, সত্যবাদিতা, সমস্ত জীবে দয়া, মৃদুতা, লজ্জা, তেজ, ক্ষমা, শান্তি, লোভহীনতা, ধৈর্য, দক্ষতা, জ্ঞান, বিজ্ঞান মঙ্গলজনক ইত্যাদি এই গুলা হচ্ছে ধর্মের লক্ষণ এবং এই গুন গুলা যাদের মধ্যে বিদ্যমান তাঁরাই প্রকৃত ধার্মিক । 


 মনুসংহিতা মতে , সহিষ্ণুতা, ক্ষমা, দয়া, চুরি না করা, শুচিতা, ইন্দ্রিয় সংযম, শুদ্ধ বুদ্ধি, জ্ঞান, সত্য এবং ক্রোধ হীনতা এ দশটি ধর্মের লক্ষণ । অর্থাৎ ধর্ম মনুষ্য মাত্র সকলের জন্য । যার মধ্যে ধর্মের এই গুণ গুলা নাই সে মানুষ নয় । সে জন্য বলে "ধর্মহীন মানুষ পশুর সমান" । মানুষ ধর্মকে কখনোও পরিবর্তন করতে পারে না । মানুষ যেটাকে পরিবর্তন করতে পারে সেটা হল "সম্প্রদায়"। ধর্মের কাজ হচ্ছে মানুষে মানুষে প্রীতি স্থাপন করা , কিন্তু যা মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে সেটা কখনোই ধর্ম নয় , সেটা হচ্ছে "মতবাদ" এবং "সম্প্রদায়"। 



 বৈদিক মিশন 
🙏🙏🙏

রবিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৪

ভগবান কে? ভগবান বলতে আমরা কি বুঝি?

ভগবান সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
ভগবান 

ভগবান: 'ভগ' শব্দের অর্থ ছয়টি ঐশ্বর্য(ষড়ৈশ্বর্য) এবং 'বান' শব্দের অর্থ যুক্ত বা সমন্বিত। বিষ্ণু পুরাণ মতে (৬.৫.৭৯), যিনি পরম ঐশ্বর্য, বীর্য, যশ, শ্রী, জ্ঞান ও বৈরাগ্য এই ছয় গুনযুক্তা তিনিই ভগবান। অর্থাৎ যে পুরুষদের মাঝে সমগ্র ঐশ্বর্য, সমগ্র বীর্য, সমগ্র যশ, শ্রী, জ্ঞান ও বৈরাগ্য পাওয়া যায় তার নামের পূর্বেই ভগবান শব্দটি উল্লেখ করা যাবে। মহাভারতে বিভিন্ন ঋষী এবং মহাপুরুষদের নামের পূর্বে ভগবান শব্দের উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া সংস্কৃত অভিধানে “ভগবান” এর “ভগ” শব্দের অর্থ – Fortune, Wealthy, Prosperity, Blessed. যেখানে –

Fortune= শ্রী

Wealthy= ঐশ্বর্য

Prosperity= বীর্য+যশ

Blessed= জ্ঞান+বৈরাগ্য

অথ্যাৎ তিনিই ভগবান যিনি মানব কল্যাণের জন্য – শ্রী দাতা, সকল ঐশ্বর্য দাতা, সকল প্রকার জ্ঞান দাতা, সকল প্রকার বীর্য ও যশ দাতা, যিনি সর্বদা ভোগ বিষয়ে অনাসক্ত(বৈরাগ্য) তিনিই ভগবান।


প্রচারে ঃVedic Mission 

🙏🙏🙏

প্রতিদিন উপাসনা ২ বার নাকি ৩ বার করা উচিত?

  ত্রিসন্ধ্যা নাকি দ্বিসন্ধ্যা পবিত্র বেদে কি উপদেশ আছে আমরা প্রতিদিন ২ বার নাকি ৩ বার উপাসনা করবো? বৈদিক উপাসনা উত্তরঃ   অবশ্যই দ্বিসন্ধ্যা...